ডেস্ক রিপোর্ট:
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম পর্যবেক্ষণ করে দেখা যাচ্ছে যে, দেশে পণ্যের দাম কমার কথা। দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ তিনি দেখছেন না। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হবেন।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বণিক বার্তা আয়োজিত পলিসি কনক্লেভে তিনি এ কথা বলেন। এ আলোচনার মূল বিষয় ছিল ‘খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান’।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, প্রতিযোগিতা কমিশনকে পুরোপুরি স্বাধীন করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। বাজারে যাতে প্রতিযোগিতাবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড না ঘটে, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যেন কোনো হস্তক্ষেপ না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, স্বল্পমেয়াদি নয়, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধান সংগ্রহে সরকারি সংগ্রহ কার্যক্রম সীমিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। সরকারি সংগ্রহ যেন আমদানিনির্ভর হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হবে। এতে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে এবং দাম নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের জন্য তার নামে একটি পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা উচিত। কারণ, বায়তুল মোকাররমের খতিবের পালিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে বুঝতে হবে দেশের বিভিন্ন খাত কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নীতিগুলো ধনিক শ্রেণিকে সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে। সাধারণ ভোক্তা বা মানুষের সুবিধার জন্য এসব নীতি গ্রহণ করা হয়নি। গত ১৫ বছরে দেশে উল্লেখযোগ্য কোনো বিনিয়োগ হয়নি। বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে কীভাবে? আর কর আদায় করা হবে কার কাছ থেকে?
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, গত ১৫ বছরে ব্যাংকগুলোকে ক্রিমিনাল ইনস্টিটিউটে পরিণত করা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংককে ধ্বংস করা হয়েছে। ব্যাংক আইনে দুর্বৃত্তায়ন করা হয়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (টিসিবি) ধ্বংস করা হয়েছে ১৫ বছর ধরে। ১২ হাজার কোটি টাকার একটি অপারেশন করে মাত্র ১৪২ জনকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। উপকারভোগীর সংখ্যা ১ কোটি বলে দাবি করা হলেও প্রাথমিকভাবে যাচাই করে দেখা গেছে, এর মধ্যে ৪৩ লাখ ভুয়া উপকারভোগী রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, টিসিবির উপকারভোগীদের আরো গভীরভাবে যাচাই করলে আরো ২০-২৫ লাখ ভুয়া উপকারভোগী পাওয়া যাবে। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা টিসিবির টেন্ডারে অংশ নেন না। তিনি ব্যবসায়ীদের টেন্ডারে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, টিকে গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মাদ মুস্তাফা হায়দার চৌধুরী, সিটি গ্রুপের এমডি মোহাম্মদ হাসান, এবং পোলট্রি খাতের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাজী ফার্মসের পরিচালক কাজী জাহিন হাসান।
Leave a Reply